What is Virus? ভাইরাস কী?

ভাইরাসের সংজ্ঞা (Definition of Virus): ভাইরাস হলো এক ধরনের অতি সূক্ষ্ম অণুজীব, যা জীব এবং অজীবের মধ্যবর্তী অবস্থানে থাকে। ভাইরাস নিজের থেকে বেঁচে থাকতে পারে না বা বংশবৃদ্ধি করতে পারে না। এটি কেবলমাত্র একটি জীবিত কোষে প্রবেশ করে তবেই সক্রিয় হয় এবং সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারে।

ভাইরাসকে সঠিকভাবে সংজ্ঞায়িত করা কঠিন। তাই বিভিন্ন বিজ্ঞানী ভাইবাসের ভিন্ন ভিন্ন সংজ্ঞা দেন।

(i) বডেন (Bawden, 1943, 49)-এর মতে, “নির্দিষ্ট পোষকে পরজীবীরূপে বসবাসকারী অন্তত 200 m (মিলিমাইক্রন) এর কম আয়তনবিশিষ্ট রোগ-জীবাণুই ভাইরাস।”

(ii) লুরিয়া (Luria, 1933)-এর মতে, “নির্দিষ্ট পোষকে অনুপ্রবিষ্ট হয়ে কেবল সেখানেই বংশবৃদ্ধি করার ক্ষমতাসম্পন্ন আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রে অদৃশ্য সত্ত্বাগুলোই ভাইরাস।”

(iii) লোফ (Lwoff, 1966)-এর মতে, “কেবলমাত্র একপ্রকার নিউক্লিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ (DNA বা RNA) সংক্রামক রোগবাহী, নিউক্লিও প্রোটিনযুক্ত, উৎসেচকবিহীন এবং বৃদ্ধি ও বিভাজন-অক্ষম বস্তু হলো ভাইরাস।”

what is virus

প্রকৃতপক্ষে, নিউক্লিও প্রোটিন দ্বারা গঠিত, অকোশীয়, রোগসৃষ্টিকারী, সূক্ষ্মাতি সূক্ষ্ম, জীব ও জড়ের মধ্যবর্তী পর্যায়ের একপ্রকার বস্তুকে ভাইরাস বলে।

ভাইরাসের মূলত দুটি অংশ থাকে:

  1. জেনেটিক উপাদান (Genetic Materialhttps://en.wikipedia.org/wiki/Genetics): এটি হতে পারে DNA বা RNA, যা ভাইরাসের বংশগত বৈশিষ্ট্য বহন করে।
  2. প্রোটিন কোট (ক্যাপসিড) Protein Coat (Capsid): এটি জেনেটিক উপাদানকে ঘিরে রাখে এবং কোষে প্রবেশে সাহায্য করে।

ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া, উদ্ভিদ, প্রাণী এমনকি মানুষের শরীরেও সংক্রমণ ঘটাতে পারে। ভাইরাসজনিত রোগের মধ্যে কিছু পরিচিত উদাহরণ হলো:

  • করোনা ভাইরাস (COVID-19)
  • ইনফ্লুয়েঞ্জা (সর্দি-জ্বর)
  • হেপাটাইটিস
  • ডেঙ্গু
  • HIV (এইডস)

What is Mass and Weight? ভর ও ওজন কাকে বলে? সম্পর্ক, পার্থক্য, কোন যন্ত্রের সাহায্যে বস্তুর ভর এবং ওজন (ভার) মাপা হয়?

ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Viruses):

  • (i) ভাইরাস জীব ও জড়ের মধ্যবর্তী পর্যায়ের একপ্রকারের বস্তু।
  • (ii) ভাইরাস দেহে সাইটোপ্লাজম না থাকায় উহা অকোশীয়।
  • (iii) ভাইরাস অতি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বস্তু, যা সহজেই মাইক্রো-পরিসুতির (microfilter) সূক্ষ্ম ছিদ্রের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করতে পারে (ব্যাক্টেরিয়া পারে না)।
  • (iv) ভাইরাস কেবলমাত্র ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দৃশ্য।
  • (v) ভাইরাস-দেহ নিউক্লিয়-প্রোটিন দ্বারা গঠিত।
  • (vi) ভাইরাস বাধ্যতামূলক পরজীবী এবং রোগসৃষ্টিকারী।
  • (vii) ভাইরাস কেবল পোষক কোশেই প্রজননক্ষম। পোষক কোশের বাইরে এরা জড়ের ন্যায় আচরণ করে।
  • (iii) ভাইরাস একমাত্র প্রতিলিপি গঠনের (replication) মাধ্যমে পুনঃকরণের দ্বারা বংশবিস্তার করে।
  • (ix) ভাইরাস-দেহে কোনোরূপ বিপাকীয় ক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় না।
  • (x) ভাইরাস-দেহে DNA অথবা RNA যে কোনো এক প্রকারের নিউক্লিক অ্যাসিড থাকে।
  • (xi) এদের অভিযোজন ও প্রকরণ (variation) ক্ষমতা অসাধারণ।

What is the Unit System? একক পদ্ধতি কাকে বলে? একক পদ্ধতি কয় প্রকার কি কি এবং ব্যবহার

ভাইরাসের প্রকৃতি (Nature of the Virus):

ভাইরাসের প্রকৃতি খুবই বিচিত্র ও জটিল। এটি জীব ও অজীবের সীমারেখায় অবস্থান করে, ফলে বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরেই ভাইরাসকে সম্পূর্ণ জীব না অজীব তা নিয়ে মতবিরোধ করে আসছেন। ভাইরাসের প্রকৃতি বোঝার জন্য নিচে এর মূল দিকগুলো আলোচনা করা হলো:

অজীবের মতো বৈশিষ্ট্য:

  • ভাইরাসের নিজস্ব কোষ নেই।
  • এটি কোনো প্রকার শ্বসন, খাদ্য গ্রহণ বা শক্তি উৎপাদন করতে পারে না।
  • এটি স্ফটিক আকারে দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকতে পারে (যেমন — টোব্যাকো মোজাইক ভাইরাস)।
  • জীবন্ত কোষের বাইরে ভাইরাস একদম নিষ্ক্রিয় থাকে।

জীবের মতো বৈশিষ্ট্য:

  • ভাইরাস যখন জীবন্ত কোষে প্রবেশ করে, তখন এটি সক্রিয় হয়ে যায়।
  • এটি জিনগত উপাদান (DNA বা RNA) ব্যবহার করে বংশবৃদ্ধি করে।
  • এটি পরজীবী হিসেবে হোস্ট কোষের সবকিছু ব্যবহার করে নিজের প্রতিলিপি তৈরি করে।

পারজীবী স্বভাব:

  • ভাইরাস সম্পূর্ণরূপে হোস্ট বা আয়োজক জীবের কোষের উপর নির্ভরশীল। এটি হোস্ট কোষে প্রবেশ করে, তার জৈব রসায়ন ব্যবহার করে বংশবৃদ্ধি করে এবং অনেক সময় হোস্ট কোষকে ধ্বংসও করে ফেলে।

তুলা যন্ত্র কী? What is Balance? তুলা যন্ত্র কাকে বলে? তুলা যন্ত্র কয় প্রকার কি কি ব্যবহার ও পার্থক্য?

ভাইরাসকে অকোষীয় বলা হয় কেন? Why are viruses called non-cellular?

ভাইরাসকে অকোষীয় (Acellular) বলা হয় কারণ, ভাইরাসের কোনো কোষীয় গঠন নেই। অর্থাৎ, সাধারণ জীবের মতো ভাইরাসের নিজস্ব কোষঝিল্লি (cell membrane), কোষপ্রাচীর (cell wall), নিউক্লিয়াস (nucleus), মাইটোকন্ড্রিয়া, বা অন্যান্য কোষীয় অঙ্গাণু থাকে না।

অকোষীয় বলার মূল কারণগুলো হলো:

কোষের অস্তিত্ব নেই:

  • ভাইরাসে কোনো কোষীয় কাঠামো থাকে না, যা প্রতিটি জীবন্ত কোষের মৌলিক বৈশিষ্ট্য।

প্রোটিন কোট ও জিনগত পদার্থ:

  • ভাইরাস শুধুমাত্র একটি জিনগত উপাদান (DNA বা RNA) এবং একটি প্রোটিন কোট (ক্যাপসিড) নিয়ে গঠিত। এটিই তার সম্পূর্ণ গঠন।

নিজস্ব বিপাকীয় প্রক্রিয়া নেই:

  • ভাইরাসের নিজস্ব কোষ না থাকায় এটি খাদ্য গ্রহণ, শক্তি উৎপাদন বা কোষ বিভাজনের মতো কোনোকিছুই করতে পারে না।

পরজীবী হিসেবে কাজ করে:

  • ভাইরাস শুধু জীবন্ত কোষে প্রবেশ করেই সক্রিয় হয় এবং হোস্ট কোষের উপাদান ব্যবহার করেই বংশবৃদ্ধি করে।

এইসব কারণেই ভাইরাসকে অকোষীয় অণুজীব বলা হয়। ভাইরাস জীবজগতে একটি ব্যতিক্রমী ও অনন্য অবস্থানে রয়েছে, কারণ এটি জীবন্ত কোষ ছাড়া বাঁচতে পারে না এবং তার গঠনে কোনো কোষই নেই।

What is Matter? পদার্থ কাকে বলে? পদার্থের অবস্থা কত প্রকার ও কি কি?


0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *